ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ

 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে কোনো না কোনো হলের সাথে আবাসিক/অনাবাসিক ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে যুক্ত থাকতে হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য ১৪ টি এবং ছাত্রীদের জন্য ৫ টি আবাসিক হল রয়েছে। এছাড়া চারুকলা অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট ও লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে আলাদা হোস্টেল এবং বিদেশী ছাত্রদের জন্য আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হল

১৯২১ সালে এই হলের যাত্রা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেই। এর মূলভবন তৈরি হয় বিশের দশকের শেষের দিকে। এই হলের প্রথম প্রোভোস্ট ছিলেন অধ্যাপক এ এফ রাহমান। এই হলের প্রথম নাম ছিল মুসলিম হল, কিন্তু পরবর্তীতে ঢাকার নবাব নবাব স্যার সলিমুল্লাহের নামে এই হলের নামকরণ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দশ বছর পর নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তার নামে একটা ছাত্রাবাস করার প্রস্তাব করা হয়। মুসলিম ছেলেদের জন্য তখন হল তৈরি হয়ে গেছে। প্রথমে এ হল ছিল এখনকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিল্ডিংএ। আবদুল্লাহ সোহরাওয়ার্দি বললেন এই হলকে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল করা হোক। এর পর বর্তমান সলিমুল্লাহ মুসলিম হল নির্মাণ করা হয় এবং সলিমুল্লার নামে নামকরণ করা হয়।[২]

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী হল। প্রথমে এই হলের নাম ছিল ঢাকা হল। ১৯৬৯ সালে এশিয়ার বিখ্যাত পণ্ডিত, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নামানুসারে এই হলের নাম করণ করা হয় শহীদুল্লাহ্‌ হল। পরে ২০১৭ সালের ১৪ জুন তারিখের সিন্ডিকেট সভায় “শহীদুলাহ্ হল”-এর নাম পরিবর্ধন করে “ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্ হল” করা হয় এবং সিনেট কর্তৃক ১৭ জুন, ২০১৭ তারিখে উক্ত সংবিধি সংশোধ অনুসমর্থন করা হয়।[৩] এ হলে মোট ৬ টি ভবন রয়েছে।

জগন্নাথ হল

অক্টোবর স্মৃতি ভবন, জগন্নাথ হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তথা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান সম্প্রদায়সহ আদিবাসী ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত বিশেষ হল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম যে তিনটি হল নিয়ে যাত্রা শুরু করে জগন্নাথ হল তার একটি।

১৯৮৫ খ্রীস্টাব্দের ১৫ অক্টোবর প্রাচীন জগন্নাথ হলের একটি আবাসিক ভবনের ছাদ ধ্বসে পড়লে সংঘটিত হয় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারায় ৩৯ জন ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি। এরপর থেকেই সাংবার্ষিকভিত্তিতে ঐ দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। নিহতদের স্মরণে নির্মিত হয় অক্টোবর স্মৃতি ভবন ও স্মৃতিসৌধ।


ফজলুল হক মুসলিম হল
অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এ কে ফজলুল হকের নামানুসারে হলের নামকরণ করা হয় ফজলুল হক হল। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই ৩৬৩ জন ছাত্র নিয়ে শুরু হয় এই হলের যাত্রা। [৪] মূল ভবনের পাশাপাশি এর একটি বর্ধিত ভবন রয়েছে যা দক্ষিণ ভবন নামে পরিচিত। আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৭৬৬ জন এবং অনাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৯৯৭ জন। অধ্যাপক ড.শাহ্ মোঃ মাসুম এই হলের বর্তমান প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করছেন।[৫]

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম হল হিসেবে পাকিস্তানের কবি আল্লামা ইকবালের নামে ১৯৫৭ সালে ‘ইকবাল হল’ স্থাপিত হয়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানিদের গুলিতে নিহত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩৫ জন আসামীর অন্যতম শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় ‘জহুরুল হক হল’ রাখেন। ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল’ নামে নামকরণ করেন। এই হলে আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৭০৮ জন, দ্বৈতাবাসিক ৬০০ জন এবং অনাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ১০৫৫ জন।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন এই হলের প্রভোস্টের দায়িত্বে আছেন।[৬]

রোকেয়া হল

রোকেয়া হলের প্রধান ফটক
চামেলি হাউজে মাত্র ১২ জন নারী শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯৩৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আবাসিক নারী শিক্ষার্থী হল হিসাবে যাত্রা শুরু হয় রোকেয়া হলের। ১৯৬৪ সালে এর নামকরণ করা হয় "রোকেয়া হল" নামে, মূলত বেগম রোকেয়া ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশ এর নারী জাগরণের অগ্রদূত। মিসেস আক্তার ইমাম ছিলেন এই হলের প্রথম প্রভোস্ট। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনা ও দালালদের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তৎকালীন আবাসিক ছাত্রীরা। বাংলাদেশের ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা সক্রিয় আন্দোলনের মাধ্যমে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে।

বর্তমানে এই ছাত্রীহলে তিন সহস্রাধিক ছাত্রীর আবাস। স্নাতক সম্মান শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে চারটি ভবন: শাপলা (প্রধান), চামেলী (নতুন), সূর্যমুখী (বর্ধিত) এবং ৭ মার্চ ভবন। স্নাতকোত্তর এবং এম. ফিল শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি ভবন-ফয়জুন্নেসা ভবন।

সাত মার্চ ভবনটি ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং উদ্বোধন করেন।

এছাড়া হল সংলগ্ন স্থানেই রয়েছে প্রভোস্ট বাংলো এবং আবাসিক শিক্ষিকাদের বাসভবন। প্রতিবছর মেধাবী শিক্ষার্থীদের রোকেয়া হল কর্তৃপক্ষ “রোকেয়া স্বর্ণপদক” প্রদান করেন।[৭]

মাস্টারদা' সূর্যসেন হল
মাস্টারদা' সূর্যসেন হল ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে এই আবাসিক হলের নাম ছিল জিন্নাহ হল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী সূর্য সেনের নামানুসারে এই হলের নামকরণ করা হয়।তিনটি ব্লকে ছয়তলা এই হলে ছাত্রদের বসবাসের জন্য রয়েছে প্রায় ৫০০টি কক্ষ। এছাড়াও রয়েছে একটি মসজিদ,একটি পাঠ কক্ষ, একটি গ্রন্থাগার, একটি মিলনায়তন ও খেলাধুলার কক্ষ, অতিথি কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাবরেটরি এবং তিনটি খাবার কেন্টিন। হলের বর্তমান প্রধ্যাক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন অধ্যাপক ড. মকবুল হোসাইন। আবাসিক ভবনের মাঝখানে রয়েছে একটি ফুলের বাগান এবং একটি কৃত্রিম জলাধার ও ফোয়ারা। উল্ল্যেখযোগ্য স্থাপনার মধ্যে রয়েছে একটি শহীদ মিনার ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই হলের শহীদ ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দের স্মরণে নির্মিত ভাষ্কর্য স্মৃতির জানালা। হলটির অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবসায় শিক্ষা অনুষদের ১০০ মিটার উত্তর পশ্চিমে। এর পাশেই রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাশাসনিক ভবন। উল্লেখ্য যে এই হলের সামনে যে সুবিশাল স্থানটি রয়েছে তা মল চত্বর নামে পরিচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান এই হলেরই আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল
প্রতিষ্ঠা ১ জানুয়ারি ১৯৬৭ তারিখে। বর্তমান আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৬০০, দ্বৈতাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৮২০ এবং অনাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৮৯০। হলের পাশে একটি মাঠ রয়েছে। এই হলে তিনটি রিডিং রুম ও একটি লাইব্রেরি (গিয়াস উদ্দিন পাঠাগার), একটি ডাইনিং ও একটি মেস (ফয়রটস এন্টারটেইনমেন্ট) রয়েছে। আছে একটি টিভি রুম ও একটি গেমস রুম।

এই হলের ৫৬৪ নাম্বার কক্ষে বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদ থাকতেন। এখানে বসেই তিনি তার অনেক বিখ্যাত বই লিখেছেন।

এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এই হলে থাকতেন।

শামসুন নাহার হল

শামসুন নাহার হলের প্রধান গেট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্রী হল। বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও কবি শামসুন নাহার মাহমুদের নামে এই হলের নামকরণ করা হয়।

কবি জসীম উদ্ দীন হল
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭৬ সালে পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীনের নামে এই হলের নামকরণ করা হয়। হলটিতে রয়েছে ৫ তলা বিশিষ্ট দুইটি সংযুক্ত ভবন। হলটিতে দুইটি রিডিং রুম, একটি টিভি রুম, একটি পেপার রুম, একটি গেমস রুম, কেন্টিন ও মেস আছে। এছাড়া নিচতলায় মসজিদ,ডিবেটিং ক্লাব এবং স্বেচ্ছা রক্তদানের সংগঠন বাঁধনেরও কার্যক্রম রয়েছে। হলের পাশে রয়েছে একটি খেলার মাঠ এবং সামনের অংশে রয়েছে মনোরম ফুল বাগান।

হলের বিশেষ আকর্ষণ একসারি দোকান যেগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী বিশেষ করে ছাত্রীদের কাছে সন্দেহাতীত ভাবে প্রচন্ড। মনোরম ও নিরিবিলি পরিবেশের জন্য হলটি সকলের কাছে পরিচিত।

বর্তমান আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৩৮৭ এবং অনাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৭৮৯।

স্যার এ. এফ. রহমান হল
১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হলটির নামকরণ করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙালি ভিসি এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী আহমেদ ফজলুর রহমান-এর নামে। আবাসিক/দ্বৈতবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৯৯২ জন ও অনাবাসিক সংযুক্ত ছাত্র সংখ্যা ৮৯৫ জন। হলটির অবস্থান নীলক্ষেত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবিটি আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগের দোতলা থেকে তোলা (০৯/০২/২০১৯)
১৯৮৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে এ হলের নামকরণ করা হয়। এ হলে আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৪৮৪ জন এবং অনাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৩৭৫২ জন। হলটি জাতির পিতার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য নামকরণ করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল
১৯৮৮ সালে মরহুম রাষ্ট্রপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদ জিয়াউর রহমানের নামানুসারে হলের নামকরণ করা হয়। এ হলের আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ১২০৫ জন এবং অনাবাসিক ছাত্রের সংখ্যা ৩৭৫২ জন।

বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস থেকে একটু দূরে নিউ মার্কেটের পিছনে বিজিবি ৩নং গেইটের মধ্যবর্তী এলাকাতে এই হল অবস্থিত। এই হলের পাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনিষ্টিটিউট অবস্থিত।

স্যার ফিলিপ হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হল
ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেল নামে ১৯৬৬ সালে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে হোস্টেলটি স্যার পি. জে. হার্টগ ইন্টান্যাশনাল হল নামে রূপান্তরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ (১৮৬৪-১৯৪৭)-এর নামানুসারে এ হলের নামকরণ করা হয়। বর্তমানে এ হলের অধিনে ১১৭ জন বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে, এর মধ্যে ১৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ও ইনস্টিস্টিউট এ অধ্যয়নরত। বাকীরা অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটে। কিছু সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মকর্তা হলে বসবাস করছেন। ভিজিটিং গবেষক ও স্কলারগণের জন্য এখানে রয়েছে ৯ টি অতিথি কক্ষ। হল যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন করে থাকে। হলে অবস্থানরত ছাত্রদের জন্য কর্তৃপক্ষ ইনডোর গেইমস প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ডাইনিং হল ও রান্নাঘর রয়েছে। ছাত্ররা কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সুবিধাসহ একটি লাইব্রেরিও ব্যবহার করছে। এছাড়া হলের সম্মুখে দুইপাশে দুটি বাগান রয়েছে।

বর্তমানে হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আছেন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট এর অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন।[৮]

অমর একুশে হল
২০০১ সালে এই হলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আবাসিক ছাত্র সংখ্যা ৪২৫ জন এবং অনাবাসিক ৩৭০ জন।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল
মহীয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। ২০০১ সালের ০৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হল উদ্বোধন করেন। এই হলে আছে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ডিবেটিং ক্লাব, আর্তমানবতার সেবার জন্য বাঁধন সংগঠন, রেঞ্জার ইউনিট, লাইব্রেরি, তিনটি পাঠ কক্ষ। এছাড়াও আছে সংস্কৃতি চর্চা কক্ষ, অডিটোরিয়াম, ইন্টারনেট সুবিধা। হলের অভ্যন্তরে ফোন, লন্ড্রি, ফটোস্ট্যাট ও বিপনী আছে।[৯]

বিজয় একাত্তর হল
৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম, মনোরম স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এ হলটি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৃহত্তম হল। হলটির অবস্থান মাস্টারদা সূর্যসেন হল এবং জিয়া হলের মাঝামাঝি স্থানে।

২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নতুন হল উদ্বোধন করেন। এই হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুইন-টাওয়ার ও অসাম্প্রদায়িক হল বলে খ্যাত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে ও সকল সম্প্রদায়ের মানুষের আত্মোৎসর্গের কথা স্মরণ করে সবার জন্য এই হল উন্মুক্ত। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই হলে সব ধর্মের ও বর্ণের ছাত্ররা থাকতে পারেন।

এ হলের তিনটি ব্লকের নাম বাংলাদেশের প্রধান ৩টি নদী যথাক্রমে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নামে নামকরণ করা হয়েছে। হলটিতে ছাত্রদের জন্য চারটি লিফট, একটি সুসজ্জিত গেস্টরুম, একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, দুটি পাঠকক্ষ, একটি কম্পিউটার ল্যাব, একটি কাউন্সেলিং রুম, হল সংসদ কক্ষ (স্থাপিত ২০১৯), একটি সেলুন, একটি সুবিশাল হল অডিটোরিয়াম ও দূরদর্শন কক্ষ, বাঁধনের হল শাখার রুম, একটি ইনডোর গেমসরুম (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় গণরুম নামে খ্যাত), একটি অত্যাধুনিক জিমনেশিয়াম, একটি পত্রিকা পাঠকক্ষ, একটি পাঠাগার ও একটি বিশাল মসজিদ রয়েছে। বর্তমানে এই হলের প্রাধ্যক্ষ ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া।

কবি সুফিয়া কামাল হল
কবি সুফিয়া কামালের নাম অনুসারে এই হলের নাম করন করা হয়। হলে আবাসন সংখ্যা ১,৪০০। দুটি ১০ তলা ভবন প্রদীপ্ত ও প্রত্যয়। এই হলে রয়েছে একটি ক্যান্টিন, লাইব্রেরি, পড়ার কক্ষ ও মেয়েদের পার্লার।


ছাত্রাবাস
আই. বি. এ. হোস্টেল
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকাতে এই হোস্টেল অবস্থিত। ব্যবসায়ে প্রশাসন ইনস্টিটিউট বা আই.বি.এ.'র ছাত্রদের জন্য এই হোস্টেল।

ডঃ কুদরত-ই-খুদা ছাত্রাবাস
ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এর ছাত্রদের জন্য এই ছাত্রাবাসটি। এটি হাজারীবাগে উক্ত ইনস্টিটিউটের পাশে অবস্থিত।

নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রী নিবাস
এটি রোকেয়া হলের পাশে অবস্থিত। এর নামকরণ করা হয় নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীর নামে। তিনি মহিলা শিক্ষা প্রসারের জন্য বিখ্যাত।

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post